মহেশপুর উপজেলা খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ জেলার একটি উপজেলা। মহেশপুর উপজেলার আয়তন ৪১৯.৫৩ বর্গ কিঃমিঃ। এই উপজেলার উত্তর দিকে কোটচাঁদপুর উপজেলা ও জীবননগর উপজেলা, দক্ষিন দিকে চৌগাছা উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব দিকে চৌগাছা উপজেলা এবং পশ্চিম দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। মহেশপুর উপজেলা ১২ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

পরিচিতি

ভৌগোলিক অবস্থান :
৪০৫.৪৪ বর্গ কি: মি: আয়তন বিশিষ্ট মহেশপুর উপজেলা উত্তরে জীননগর ও কোটচাঁদপুর উপজেলা, দক্ষিণে চৌগাছা উপজেলা ও ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, পূর্বে চৌগাছা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত।

প্রধান নদ-নদী ও বাওড় :
উল্লেখযোগ্য নদ-নদী ও বাওড়ের মধ্যে রয়েছে কপোতাক্ষ ও বেতনা নদী।
বাওড়ের মধ্যে রয়েছে বলধার বাওড়।

শহরের আয়তন ও জনসংখ্যা :
৯টি ওয়ার্ড ও ১৪টি মহল্লা নিয়ে মহেশপুর শহর গঠিত। শহরের আয়তন ১১.৪৭ বর্গ কি: মি:।
শহরের মোট জনসংখ্যা ২৩২৭৩। এর মধ্যে পুরুষ ৫১.২৬% ও মহিলা ৪৮.৭৪%। প্রতি বর্গ কি: মি: এ জনসংখ্যার ঘনত্ব ২০২৯ জন। শহরের জনগণের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৩১.৯%।

প্রশাসন :
১৯৮৩ সালে মহেশপুর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। ১টি পৌরসভা, ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৫৯টি মৌজা এবং ১৯৪টি গ্রাম নিয়ে মহেশপুর উপজেলা গঠিত।

স্থাপত্য, ঐতিহ্য এবং পুরার্কীতি :
শিব মন্দির (৩০২ বি এইচ), খালিশপুরে নীলকুঠি, বলাই শাহের সৌধ এবং শ্রীপথ মন্দির।

ঐতিহাসিক ঘটনা :

১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অনেক পাকিস্তানী সেনা ও মুক্তি সেনা নিহত হয়। এদের মধ্যে ছিল রওশন ও আব্দুল আজিজ।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন :
সাহারদারিতে গণহত্যার স্থান এবং মহেশপুর হাইস্কুলে শহীদ স্মৃতিসৌধ।

জনসংখ্যা :
মোট জনসংখ্যা ২৪৬৩৫০। এরমধ্যে পুরুষ ৫১.২২% ও মহিলা ৪৮.৭৮% এবং মুসলমান ৯৫.৫৯% ও হিন্দু ৪.৩১% এবং অন্যান্য ০.১০%।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান :
মসজিদ ৩৩৫টি এবং মন্দির ২১টি। এগুলোর মধ্যে ও উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মহেশপুর জামে মসজিদ, শিব মন্দির এবং শ্রীপাট মন্দির।

সাক্ষরতা :
গড় সাক্ষরতা ২২.২%। এর মধ্যে পুরুষ ২৮.২% এবং মহিলা ১৫.৮%।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :
সরকারী কলেজ ১টি, কলেজ ৪টি, হাইস্কুল ৩০টি, মাদ্রাসা ১২টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৬টি, বেসরকরী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৮টি এবং কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১টি। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মহেশপুর হাই স্কুল (১৮৬৩)।

স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত সংবাদপত্র ও সাময়িকী :
সাপ্তাহিক সীমান্ত বাণী।

সংস্কৃতিক সংগঠন :
পল্লী ক্লাব ২০টি, প্রেস ক্লাব ১টি, গণগ্রন্থাগার ১টি, সিনেমা হল ১টি, থিয়েটার মঞ্চ ১টি এবং থিয়েটার গ্রুপ ৪টি।

প্রধান পেশা :
কৃষি ৪৭.৩৭%, কৃষি শ্রমিক ৩২.৩৬%, মজুরী শ্রমিক ১.৪৪%, ব্যবসা বাণিজ্য ৯.৪০%, চাকুরী ২.২২% এবং অন্যান্য ৭.২১%।

প্রধান ফসল :
ধান, পাট, গম, আখ, পেঁয়াজ, বসুন ও তুলা।

প্রধান ফল :
আম, কাঁঠাল, কলা, কালোজাম, পেঁপে, নারিকেল, তরমুজ ও জামরুল।

যোগাযোগ সুবিধা :
পাকা সড়ক ৩৫ কি: মি:, আধাপাকা ২৫ কি: মি:, কাঁচা রাস্তা ৭১৮ কি: মি:, জলপথ ৪ নটিকেল মাইল।

শিল্প কারখানা :

বরফ কারখানা ৪টি এবং ওয়েল্ডিং ২০টি।

কুটির শিল্প :
তাঁত ৩৫টি, স্বর্ণলংকার ৪৫টি, কামার ৯৫টি, কুম্ভকার ১৫টি এবং কাঠের কাজ ১৬৫টি।

হাট, বাজার, মেলা :
হাট-বাজার মোট ৩৩টি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাট হচ্ছে খালিশপুর, পুরাপাড়া, তালসা, শ্যামপুর, জিন্নাতনগর, ভৈরবা, সামানতা এবং বেলেমাঠ। উল্লেখযোগ্য মেলা হচ্ছে ফতেহপুর বৈশাখি মেলা এবং মহেশপুর দুর্গাপূজা মেলা।

প্রধান রপ্তানী :
টমেটো, কলা, কাঁঠাল, আলু ও খেজুরের গুড়।

এনজিও তৎপরতা :
তৎপরতা চালাচ্ছে এমন গুরুত্বপূর্ণ এনজিওগুলো হচ্ছে ব্র্যাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, প্রশিকা, আহসানিয়া মিশন, ওয়েভ এবং আর. আই. সি. ও।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র :
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১টি এবং স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৪টি।